উর্মিবাংলা প্রতিদিনঃ হিজড়া। এক অভিশাপ নাকি অসুস্থতা। এ প্রশ্নের উত্তর হয়তো মিলবে না তবে ভোগান্তি তো আছেই। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া স্টেশন থেকে সিলেট গামী এক ট্রেনযাত্রী ভয়ংকর অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন। যাত্রাপথে হিজড়াদের জন্য টাকা আলাদা করে রাখতে হয় যাত্রীদের। আর সঙ্গে নবজাতক থাকলে দ্বিগুণ তিনগুণ টাকা গুণতে হয়। না দিলে নানাধরনের অশালীন আচরণ এমনকি হেনস্তা করে হিজাড়া চক্রটি। মান সম্মানের ভয়ে কেউ এদের বিরুদ্ধে মুখ খোলে না।
বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার পর একটি গ্রুপ টাকা নেয় । ১০ টাকা দিয়ে ভাবলেন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে । কিন্তু না । ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার পর আরেক গ্রুপ। শ্রীমঙ্গল ছাড়ার অন্য আরেক গ্রুপ। টাকা দিতে না চাইলে সবার সামনে তার গাল চেপে ধরে হিজড়া সদস্যরা ।
এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যাবার উপায় নেই। ওরা যেন যাত্রীদের টার্গেট করে টাকা চায় বলে জানায় ভুক্তভোগী এক ট্রেন যাত্রী ।
তিনি জানান, যাত্রীরা টাকা দিতে বাধ্য। নয়তো হেনস্তা করে ফেলে। তিনি আরও জানান, তার পাশে এক দম্পতি নবজাতক নিয়ে সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গল ফিরছিলেন। তাদের কাছে হিজড়ারা ৫শ টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি প্রথমে ৫০ টাকা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। কোনোমতে অন্য যাত্রীদের সহযোগিতায় ১০০ টাকা দিয়ে রক্ষা পান।
শুধু পারাবত নয় সিলেট থেকে ঢাকা ও চট্রগ্রামগামী আন্তঃনগর সব ট্রেনেই এভাবে বেপরোয়া চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত তৃতীয় লিঙ্গ খ্যাত হিজড়া। তাদের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। শুধু হিজড়া নয় আন্তঃনগর ট্রেনে হকারদের দৌরাত্ম্যেও অতিষ্ঠ যাত্রীরা।
ট্রেন যাত্রীদের মতে, এসব হিজড়াদের উৎপাত ও চাঁদাবাজি থামাতে উদ্যোগ নিতে হবে রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী অর্থাৎ জিআরপি পুলিশের। এসব নিয়ন্ত্রণকারী রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী এদের আয়ের ভাগ পায়। ফলে তারা হকার কিংবা হিজড়াদের উল্টো নিরাপত্তায় বেশি ব্যস্ত থাকে।
হিজড়াদের বিভিন্ন গ্রুপের কথা স্বীকার করে কুলাউড়া জিআরপি থানার ওসি মো. আবদুল মালেক এর ভাষ্যনুযায়ী, এরা সাধারণত বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে থাকে। ফলে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। আইনগতভাবে এদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। হিজড়া বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না।


